অকুফের মানি এবে শোনো খবর।
নিরবধি নেগাদারি কলব উপর ॥
কলব প্রভুর নাম করিছে স্মরণ।
হর হালে তার পরে ধেয়ান রাখন ॥
তবেই কলব ঘর জন্মিবে খেয়াল।
সে খেয়ালে মন ভাব হইবে উজ্জ্বল ॥
মোরাকেবা হবে তায় খুলিবে নূর।
রঙ্গ রঙ্গ মোকাশেফা হইবে জহুর ॥
মোশাহেদা হবে তার হয়ে গেলে ফানা।
তখন প্রভুর জাত পাইবে ঠিকানা ॥
☆ দ্বিতীয় মোরাকাবা -
অকুফে আদদী ও পাছ আনপাছ
ভাটা উজান দুই দম আসে আর যায়।
ভাটাতে আল্লার নাম ‘হু’ নামে উজায় ॥
ভাটা উজান দুই ধার করিলে সাধন।
তাহাতে প্রকাশ পাবে গোপন রতন ॥
উঠাইতে মণি মুক্তা দোন দরিয়ার।
কোরানে ইশারা কথা আসিয়াছে তার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তাআলা)
ويخرج منهما اللؤلؤوالمرجان
(ওয়াইয়াখরুজু মিনহুমা লু’লউ ওয়াল্ মারজান)
كرنگاه دارى پاس انفاس -
به سلطانى رسا ندت ازبن پاس -
ترايك پند بس دوهود عالم -
كه پرنيايد زجانت بسى خدادم -
(কার নেগা দারি পাছ্ আনফাছ্
বে সুলতানি রেঁছানাদাত আজইয়ে পাছ্
তেরা এক পান্দে বাছ্ দোহুদ্ আলম
কে পর না ইয়া ইদ্ জাঁ জান্নাত
বাছে খোদ আদম )
যদি তুমি নেগা রাখ পাছ আন পাছ।
ফানা ফিল্লায় পৌঁছাইবে সেই আনপাছ ॥
☆ তৃতীয় মোরাকাবা -
সম, সম, দম, দম রাখন খেয়াল।
স্মরণ করিনু কত ভুলি কত কাল ॥
হায় ভুলে গিয়েছিনু আপনা মাবুদ।
ভুলে দুর স্মরণেতে মাবুদ মৌজুদ ॥
এহাতেও মোরাকাবা খুলিবে উহার।
কিন্তু ভুল হতে চাই রতে হুসিয়ার ॥
☆ চর্তুথ মোরাকাবা -
লা-ইলাহা নফি বটে ইল্লাল্লাহ্ এছবাত।
নাহিক দ্বিতীয় সাঁই সার এক জাত ॥
ঘুমাইবে পেচ দিয়া লতিফার পর।
নহে কলবেতে শুধু মারিবে টক্কর ॥
তাহাতে হালাত যত হইবে বাহের।
মোশাহেদা হবে জাত পাইবে জাহের ॥
পথিকের ডাহিন পদ চালাইবা কালে।
নফি শব্দ কহে আর বামে এছবাত বলে ॥
আসেক পথের পরে যায় সপাসপ।
প্রত্যেক কদমে নফি করে দপাদপ ॥
পদের পৃষ্ঠের পরে তাহার নজর।
এহাতে তাজল্লি তার হয় বহুতর ॥
তাহাতে হইবে ফানা চিনিবে মোকাম।
যত চলে তত তার বাড়িবে আরাম ॥
☆ পঞ্চম মোরাকাবা -
উচা পরে চলে কিবা নিম্নদিক যায়।
নফি ও এছবাত শুধু করিলে তাহায় ॥
ছালেকের যে মোকাম আছয় উরুজ।
এরূপ জেকেরে তার খুলিবে বুরুজ ॥
ঘোরে যদি ছালেকান নিজ পদ ভরে।
আজব তাজল্লি হবে তাহার উপরে ॥
পথিকের চলা কালে ঢোলে যদি হাত।
তাহতেও ছালেকান পাইবে হালাত ॥
☆ ষষ্ঠ মোরাকাবা -
মধ্যস্থল দুই চক্ষু গুরুর যথায়।
খেয়ালি নজরে যদি চলিবে রাহায় ॥
খুলিবে তাহার পরে শত কেরামত।
উর্ধ্বপানে ভেদাভেদ জানিবে আলবৎ ॥
পশর উদয় হবে পিছ পানে তার।
দীপ তুল্য পাবে তারে আরসের সার ॥
মাহমুদা মাকামের খুলিবে দুয়ার।
আরসের রাজধানী প্রকাশ ভান্ডার ॥
মোখালেফ পরে সেই আসিবে গালেব।
ফলিবে অদন্য ফল যাহার তালেব ॥
হাটিলে দৌড়িয়া তার কেবা লাগ পায়।
রাখিনু ভেদের কথা খুলিব কোথায় ॥
☆ সপ্তম মোরাকাবা -
ছাওয়ারিতে ছালেকান হইলে ছওয়ার।
নিমিষে মোকাম খোলে তাজল্লির দ্বার ॥
গুরু রূপ দীপ তত্ত্ব করিলে তখন।
ঘোর যাবে নূর পাবে দেখিবে রৌশন ॥
প্রদীপ পশর যেন করে অন্ধকার।
চক্ষু বিনা অন্ধ নহে আর কিবা তার ॥
শশীর আলোক জ্যোতে রাতে পূর্ণিমার।
পূলকে পথিক যেন বিনাশে আন্ধার ॥
☆অষ্টম মোরাকাবা -
করাল পাথর কিবা নগীনা উপর।
এক দৃষ্টে ছালেকান করিলে নজর ॥
জেকের তরক্কি হবে ছাড়িবে ফিকির।
প্রকাশ্য নজর তার হয়ে যাবে ধীর ॥
তেনকালে মন চক্ষু হইবে রৌশন।
দেখিবে ত্রিজগন্নাথ তাজল্লি মগণ ॥
পাইবে আন্ডার খোলে এ সাত ভান্ডার।
গহন কানন আছে পেটেতে মশার ॥
মাছের বয়জার পেটে সাত সমুদ্দুর।
নানাবিধ মীন আদি হাঙ্গর ডংকুর ॥
খুজিলে পুতের পেটে মাতা দুধ খায়।
পুত্র গতি বিনে মাতা করে হায় হায় ॥
ফলেতে রয়েছে মিষ্ট মিষ্টে আছে ফল।
জলেতে রয়েছে মীন মীনে আছে জল ॥
খুজিলে স্ত্রীর পেটে পতির জনম।
শেষেতে প্রথম আছে নাস্তিতে আলম ॥
আন্ধারে আনওয়ার আর কুফরেতে নূর।
বেহেস্তে ইবলিস আর দোজখেতে হুর ॥
ইবলিছের গলে গাথা পেগাম্বরী হার।
তেকারণে তার দমে ফাঁশিল সংসার ॥
সকলে কি বুঝে হেন চিকণ রচনা।
কেমনে অন্ধল পাবে প্রদীপ ঠিকানা ॥
☆ নবম মোরাকাবা -
গহন কানন কিবা পাতায় পাতায়।
ছালেকান করে যদি দৃষ্টিপাত তায় ॥
হেরিবে রঙ্গের ফুল রঙ্গের কানাই।
হইবে তাজল্লি কত লেখা জোখা নাই ॥
নজর হইবে ফানা কল্পনা সকল।
হইবে শরীর ফানা হৃদয় বিমল ॥
দেখে বটে নজরেতে ফানা সমুদয়।
ভাব বিনা বদনেতে রবে না নিশ্চয় ॥
আহারে এহেন ভাব হইবে যাহার।
কি ভয় তাহার বল জগত মাঝার ॥
☆ দশম মোরাকাবা -
মহীপরে শূন্য ভরে আকাশের তলে।
একদৃষ্টে রবে যদি ভাবুক সকলে ॥
হেরিবে কদম্ব ফুল গোলাকার চাক।
হৃদয় আসন তান দেখিয়া অবাক ॥
দেখিবে মস্তক নূর তাজল্লির ভাবে।
দেখিবে মস্তকে শুধু যত ইতি ভবে ॥
হেরিয়া হইবে ফানা তাহার ভিতর।
ফলিবে বাকা ফল ফানা আগে কর ॥
মজমুয়া ফাতুয়াতে
اما التجلى فى صورة الانسان
فهوا جمع وافضل تجليه -
(আম্মাত্তাজ্জাল্লি ফি ছুরাতিল্ ইনসানো
ফাহুয়া আজমাউ ওয়া আফজালু তাজাল্লিহা।)
মানব ছুরত পরে যে তাজল্লি হয়।
উত্তম তাজল্লি তাহা জানিবে নিশ্চয় ॥
যে ভাব উত্তম হবে তাজল্লির ফল।
ফানাওল ফানা সেই জানিবে কেবল ॥
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন