সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দমের সাধন

দমের সাধন

একুশ হাজার ছয়'শ বারে
আসা-যাওয়া করে,
কে থাকে ও বন্ধু আমার ঘরে।
ডান নাসিকা কে দক্ষিণ
অার বামকে বামই বলে,
দমের ঘরে দেখব এবার
কী এমন খেলা চলে!

ডান আর বামে চলেরে
দম বারো বার করে,
শান্তি স্বস্তি পেতে কিছুটা-
দম রাখো বন্ধু ধরে।
এ দেহে আসে রাত্রিদিন
কেউ রাখে নি খবর,
আমাবস্যা পূর্ণিমা হয়
দেহে দমে কর কিছু সবর।

আমাবস্যায় কর গুরু ধ্যান
নারী সঙ্গ কভু নয়,
পড়িলে কামের ফাঁদে বন্ধু
তখন স্বাস্থ্য নষ্ট হয়।
দখিনে কর আহার-বাহার
বামে মূত্র আর পান,
দখিনে রেখে দম নারী
আলাপনে বাড়বে হৃদয়ে টান।

শুভ-অশুভ,আগুম-নিগুম
এ দমেতেই যায় জানা,
জেনে যাবে অতি সহজে,
আজরাইল কবে -দিবে-হানা।
তিন মোয়াঙ্কেল সেথা বিরাজ করে
দম সাধনা কর,
আদ্যোপান্ত/সত্যতা জানতে
ও ভাই সাধুর সঙ্গ ধর।
আল্লাহ্ পাকের উক্তি                 ৫২

قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
واذ كرربك اذانسيت -
(ওয়াজকুর রাব্বাকা ইজা নাসিতা।)
ভুলিলে স্মরণ তারে চাহি অনুক্ষণ।
প্রত্যেক দমেতে কর প্রভুর স্মরণ ॥
যাহার কলব হয় ভুলেতে পতিত।
স্মরণ কারণে তারে করেন তুরিত ॥
ভুলে মূল পেলে ভুল ভুল সর্ব্বদায়।
মূলে ভুল হলে ভুল না ভুল বৃথায় ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
ولا تطع من اغفلنا قلبه من ذكرنا –
(ওয়ালা তুতেমান আগ্ফাল্না কাল্বোহো মিন্জেক্রে না।)
নাহি শুন তার কথা হও খবরদার
প্রভুর স্মরণে মন গাফেল যাহার ॥
প্রভুর স্মরণে মন যাহার গাফেল।
শুনিলে তাহার কথা হইবে মস্কেল ॥
প্রত্যেক দমেতে হয় স্মরণ যাহার।
পীর বই সেই ভেদ কোথা পাবে আর ॥
পীর বিনা গাফলত কোথা যাবে দূর।
ওয়াব্তাগু তবে কেনে কহিল গাফুর ॥
গাফ্লাত ছুটিলে শেষে হইবে তছকিন।
ভ্রম যাইবে দুর ফিরিবে কুদিন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
هوالدى انزل السكينة فى قلوب المؤمين ليزدادوا ايمانا امع ايمانهم
(হুয়াল লাজি আনজালাস সাকিনাতা ফি কুলুবুল মো’মিনিনা লিইয়াজ্দাদু ইমানাম্ মা’ইমানুহুম)
খোদা পাক মমিনের অন্তর মাঝার।
উতারে তছকিন শুধু ভরসাই সার ॥
ঈমানের সাথে বেশী হইবে ঈমান।
সন্তান যুবক যেন ছিল সে সন্তান ॥
এহাতে জেকের মর্ম্ম বুঝে লহ সার।
বেগর জেকেরে মন হবে না কারার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
الابذكر الله تطمئن القلوب
(আলা বেজেক্রেল্লাহে তাত্মাইনাল কুলুব।)
হুসিয়ার হয়ে শুন কোরান কথন।
জেকেরেতে শান্তশীল হবে কিনা মন ॥
মন যদি পরিষ্কার হইবে তোমার।
একমাত্র ভরসাই মানসিক সার ॥
মানস যাহার হবে প্রভু আজ্ঞা চয়।
আবেদ মাবুদ ভাবে ভাবুক নিশ্চয় ॥
কিন্তু যে জেকের আছে জান দুই প্রকার।
একিনীতে সার পদ এতবারি উসার ॥
যেমন নামাজ শুধু জেকের এতবারি।
পাইবে এতবারি ফল কহি ব্যাখ্যা করি ॥
বহুতর আছে যেন নামাজ নফল।
এক এক রেকাত তার কত হজ্ব ফল ॥
তবে কি হইল হজ্ব মক্কা না যাইয়া।
হজ্ব রেখে পড় তবে নামাজ বসিয়া ॥
একিনী হবে না হজ্ব এতবারি হবে।
একিনী হইলে হজ্ব মক্কা কেবা যাবে ॥
এমন জেকের যত এতবারি হয় ॥
অতএব দেল তার কারার না রয় ॥
একিনী জেকের যেন আপ্তাবের ধূপ।
তাতে প্রভু কহিয়াছে মোৎমাইন্যাল কুলুব ॥
মোৎমাইন হবে ভাই কলব যাহার।
দুজাহান হইতে চক্ষু উঠে যাবে তার ॥
তাতেই কহিল সাঁই সার্থক বচন।
খুলিয়া দিয়াছি আর দেখিছ রৌশন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
لقد كنت فى غفلة من هذا
فكشفنا عنك غطا ئك فبصرك اليوم حديد
(লাকাদ কুন্তা ফি গাফ্লাতিন মিন্হাজা ফাকা সাফ্না
আন্কা গিতা আকা ফাবাস্সোরুকাল্ ইওমা হাদিদ্)
শুধু গাফলাতে পড়ে আছিলা ভরমে।
খুলিছে তোমার চক্ষু আমার করমে ॥
অতএব দৃষ্টি তব তেজ অতিশয়।
মোকাসেফা তেজ এই আর কিছু নয় ॥
খোদার জেকেরে মন করে জাগরণ।
ফাড়িয়া বাতেনী পর্দ্দা দেখিছে রৌশন ॥
সেই যে রৌশন বাতি মনপুরে জ্বলে।
বুঝিবে না অন্ধগণ আহাম্মদি বলে ॥
একিন অন্ধল ভবে হবে যেই নর।
সহস্র এলেম পতি পাবে না পশর ॥
এরূপ ভাবুকে সখা হয়ে নিরাঞ্জন।
আদরে ডাকিছে ডাক শুনহ বচন ॥
قوله تعالى
কাওলাহু তা’আলা
الله ولى الذين امنوا يخرجهم من الظلمات الى النور
আল্লাহু ওয়ালিউল্লাজিনা আমানু ইখ্রিজুহুম
মিনাজ্ জুলুমাতে ইল্লান্ নূর ॥)
খোদাই বান্ধব বটে মমিন সকল।
নিকালিছে নূর পানে করিয়া বিমল ॥
ঈমান তকলিদী বটে অন্ধকার ঠাঁই।
হবে না মোর্শেদ বিনে ঈমান রোশনাই ॥
জেকেরের কিঞ্চিৎ বিবরণ            ৬৩

প্রথমে জেকের করা পরেতে ফিকির।
ছুলুকের মোরাকেবা তার অন্তে স্থির ॥
অজুদেতে দশ জন আছয় ফকির।
তাহারাই নিরবধি করেন জিকির ॥
লতিফা বলিয়া কেহ রাখে তার নাম।
হরফ বলিয়া কেহ কহে পরিণাম ॥
অজুদ বলিয়া ঘর সে ঘর আপনা।
আছয় কুঠরি দশ কেহ কহে থানা ॥
যে নিয়মে মোজাদ্দেদ সে ঘর সাজায়।
কতিপয় প্রকাশিয়া কহিব এথায় ॥
সে হরফের নাম এবে শুন কহি তায়।
কলব, রূহু, ছের, খফি,
আখফা, নফস্ হয় ॥
আব, আতশ, খাক, বাদ্ এই দশ জন।
নিজ স্থানে বসে করে প্রভুর কীর্ত্তন ॥
ডাহিন বামে দো পেস্তান দো আঙ্গুল তলে।
দক্ষিণে লতিফা রূহু কলব্ বামস্থলে ॥
ছের খফি দো পেস্তান উপরেতে হয়।
দো আঙ্গুল উপরেতে জানিবা নিশ্চয় ॥
নীচু স্থানে ছিনা মধ্যে আখফার বাসর।
দুই ভোয়ার মধ্যে খানে আছে নফস্ ঘর ॥
আব, আতস, খাক, বাদ্ অজুদ মাঝার।
সর্বস্থানে আছে তারা নাহিক নির্দ্ধার ॥
মোর্শেদের তাওয়াজ্জুতে লতিফা সকলে।
মনে মুখে একিনেতে আল্লা আল্লা বলে ॥
মন মুখ নাম কাম চার অলঙ্কার।
চারিপদে এক পদ আল্লা নাম সার ॥
শিকারী বন্দুক তার পড়িবে শিকার।
বারুদ গোলা এই চারি তার অলঙ্কার ॥
লতিফা ফকির যারা অজুদ মাঝার।
তাহারাই দেশ পতি ঘরের মোক্তার ॥
তাহারাই বাধ্য যদি হইবে নিশ্চয়।
মুল্লুক আবাদ হবে না রহিবে ভয় ॥
যার পরে হইয়াছে রাজত্বের ভার।
তাঁহার আধারে হয় মুল্লুক আন্ধার ॥
অজুদ মুল্লুকে যেই মালেক ফকির।
তারা যদি রত হবে করিতে জিকির ॥
শরীর পাতল হবে কাগজ আকার।
কখন ছুটিবে নূর দেখে চমৎকার ॥
বিজলী মাফিক কভু দেখিবে নজরে।
পৃথিবী রৌশন কভু পাইবে অন্তরে ॥
দম তার মোটা হবে থামা নাহি যায়।
বেতাব হইয়া কভু করে হায় হায় ॥
রোনাজারি করে কভু আছাড়ে পাছাড়।
হালেতে আসিয়া কভু করে হাহাকার ॥
লতিফা আতশে যবে ছালেক বসিবে।
গরম হইবে দেহ আগুন দেখিবে ॥
আবেতে বসিবে যবে করিতে জেকের।
পানি কি বাদল ন্যায় পাবে তাতে টের ॥
যেমন লতিফা গুণ তেমনি পাইবে।
যেমন মোর্শেদ শিষ্য তেমনি হইবে ॥
ছরিওল আছর বটে হবে যেই পীর।
বসা মাত্র পাবে তায় এরূপ তাছির ॥
হইবে এমন পীর পৃথিবীতে কম।
দো চার মিলিতে পারে তামাম আলম ॥
তার পরে একাযুক্ত দশ লতিফায়।
করিলে জেকের কহে সুলতানী তাহায় ॥
সুলতান জেকের হবে হেন আশ্বাদন।
ধনহীনে পায় যেন অমূল্য রতন ॥
কাঁপিবে বদন তার করে থর থর।
আল্লা আল্লা রোমে রোমে নিরবধি স্বর ॥
শুনিলে এমন লোক আল্লাহর কোরান।
বেচইন হবে আর শুনে যদি গান ॥
নামাজে হইলে খাড়া এসে যাবে জোস।
কোন জন একেবারে হইবে বেহুঁস ॥
লেখিয়া সে সব কথা কে করে তামাম।
এবে শুন সাঁইয়ের কিঞ্চিৎ কালাম ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সাধনা ও সিদ্ধি

সাধনা ও সিদ্ধি ‘সাধনা’ ও ‘সিদ্ধি’ বস্তু দুটি কি? ইহা আমাদের ভালো করে জেনে নেওয়ার দরকার। প্রথমত ‘সাধনা’ অর্থাৎ অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাইবার জন্য যে পরিশ্রম বা যে কাজগুলো স...

মোরাকাবা তত্ত্ব

মোরাকাবা بسم الله الرحمن الرحيم মোরাকাবার বিবরণ ১। প্রশ্ন - মোরাকাবা কাহাকে বলে ? উত্তর - (আমলী জিকিরের পরে জিকিরে  মা’রুফ বা প্রচলিত) জিকির দুই প্রকার, জিকিরে লেছানী অর্থ...